মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। বুধবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক দশকগুলোতে কৌশলগত অংশীদার হয়ে ওঠা দুটি শক্তিশালী দেশের মধ্যে এ পদক্ষেপ সম্পর্কের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে ভারতীয় রপ্তানি খাতের জন্য এটি একটি বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
মার্কিন প্রশাসনের এই শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপের কারণ হিসেবে ভারতের রাশিয়া থেকে তেল কেনাকে দায়ী করা হচ্ছে। পোশাক, রত্ন ও গহনা, জুতা, ক্রীড়া সামগ্রী, আসবাবপত্র এবং রাসায়নিকসহ বিভিন্ন পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত এ শুল্কহার এখন বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা ব্রাজিল ও চীনের সমান।
এর ফলে ভারতের হাজার হাজার ক্ষুদ্র রপ্তানিকারক হুমকির মুখে পড়েছে। চাকরি হারাতে পারেন অনেকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিজ রাজ্য গুজরাটের ব্যবসায়ীরাও সরাসরি ক্ষতির শিকার হতে পারেন। এতে বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল প্রধান অর্থনীতিগুলোর একটি ভারতের প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
হোয়াইট হাউস ও নয়াদিল্লির মধ্যে বুধবার নতুন আলোচনার কোনো ইঙ্গিত মেলেনি। এর আগে পাঁচ দফা আলোচনায় ভারত যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কহার প্রায় ১৫ শতাংশ কমানোর জন্য চেষ্টা করলেও জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেনি।
তবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, আলোচনা চলমান রয়েছে। তার ভাষায়, “ভারত বা যুক্তরাষ্ট্র—কোনো পক্ষই বলেনি যে আলোচনা বন্ধ হয়ে গেছে।”
এদিকে নতুন শুল্ক কার্যকর হলেও ভারতীয় শেয়ারবাজারে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। কারণ হিন্দু ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে সেদিন বাজার বন্ধ ছিল।
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সমঝোতা না হলে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বড় ধরনের ধাক্কা খেতে পারে, যার প্রভাব বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও পড়বে।