জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলে ল্যাপটপ চুরির অভিযোগ জানাতে গিয়ে প্রভোস্ট ও হাউস টিউটরের কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত ও অমানবিক মন্তব্যের মুখে পড়েছেন এক শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, গতকাল রাতে নিজের রুম থেকে ল্যাপটপ চুরির পর তিনি হলে কর্তৃপক্ষের সহায়তা চাইতে গেলে, তার মাস্টার্স শেষ হয়েছে কিনা এমন প্রশ্ন করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয়।
তিনি জানান, “আমি বলছিলাম যে আমি কাজ করি, পড়ালেখা করি, অফিস করি— তখন স্যার-ম্যাডাম প্রশ্ন করেন মাস্টার্স শেষ হয়েছে কিনা। বলি, আমার ডিফেন্স হয়েছে ১ জুলাই। তখন ইতিহাস বিভাগের হাউস টিউটর অধ্যাপক সুলতানা আক্তার বলেন, ‘তোমার রেস্পন্সিবিলিটি তো আমাদের না।’”
তিনি আরও জানান, “আমি বলি, রুমটা তো হলে, এখান থেকে ল্যাপটপ হারালে রেস্পন্সিবিলিটি আপনাদের না? তখন উনি বলেন, ‘না, তুমি আছো কেনো?’ প্রভোস্ট গোলাম মোস্তফাও বলেন, ‘তোমার কেসটা আমাদের রেস্পন্সিবিলিটি না।’ তারা বলেন, হলে চেকিং হচ্ছে, তুমি কেনো এখনো হলে?”
সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর অংশ ছিল শিক্ষার্থীর প্রতিক্রিয়া ও তার জবাবে প্রভোস্টের মন্তব্য। শিক্ষার্থী প্রশ্ন তোলেন, “আপনারা তো এমনভাবে বলছেন যেন ধর্ষণ বা খুন হলেও বলতেন ঐ মানুষটা ওখানে কেনো ছিলো?” এতে প্রভোস্ট গোলাম মোস্তফা জবাব দেন, “হ্যাঁ, আমরা এটাই আগে জিজ্ঞেস করতাম যে কেনো ওখানে আছে।”
এই বক্তব্যে হতবাক শিক্ষার্থী বলেন, “আজকে আমার ল্যাপটপের উপর দিয়ে গেছে, কিন্তু যদি আমি রেপড হতাম ঐ রুমে, আপনারা বলতেন আমি ওখানে কেনো ছিলাম।” উত্তরে প্রভোস্ট পুনরায় বলেন, “হ্যাঁ, ওটাই।”
এই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। হল প্রশাসনের এমন বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে একজন শিক্ষক কতটা মানবিক ও দায়িত্ববান আচরণ করছেন, বিশেষত যেখানে একজন শিক্ষার্থী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এই বিষয়ে প্রভোস্ট ও হাউস টিউটরের কাছ থেকে তাদের বক্তব্য জানতে চেষ্টা করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বশীল মহলের হস্তক্ষেপ ও একটি স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা।