গত বছর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় শিক্ষকদের সংশ্লিষ্টতা তদন্তে গঠিত স্ট্রাকচারাল কমিটিতে থাকতে চান না কলা ও মানবিকী অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মো. মোজাম্মেল হক।
গত সোমবার (১৮ আগস্ট) উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসানের নিকট প্রেরিত এক চিঠিতে তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
উপাচার্যকে দেওয়া চিঠিতে কলা ও মানবিকী অনুষদের ডীন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক লেখেন, গত ১৫ জুলাই ২০২৪ তারিখে উপাচার্যের বাসভবন ও এর আগে-পরে ক্যাম্পাসে সংগঠিত সহিংস ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকবৃন্দের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট কর্তৃক গঠিত স্ট্রাকচারাল কমিটির আমি একজন সদস্য (ডিন হিসেবে)। গত ১৭ আগস্ট ২০২৫ তারিখে কমিটির সামনে সাক্ষ্য দিতে আসা একজন শিক্ষার্থী আমাদের উপস্থিতিতে আপনাকে জানান যে, তিনি কমিটির উপস্থিত সদস্যবৃন্দের সামনে সাক্ষ্য দিতে অনাগ্রহী কারণ কমিটিতে এমন একজন সদস্য আছেন (আমাকে ইঙ্গিত করে) যিনি উল্লেখিত সহিংস ঘটনার নিমিত্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ শিক্ষকদের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত করছে কি না তা খতিয়ে দেখতে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দকে ইতোমধ্যে অনুরোধ করেছেন। উপস্থিত শিক্ষার্থীর এ মনোভাব প্রকাশের পর আপনি আমিসহ কমিটির কয়েকজন সদস্যকে পাশের কক্ষে পাঠিয়ে দিয়ে শিক্ষার্থীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
উপাচার্যের এই উদ্যোগে তিনি বিব্রতবোধ ও উপাচার্যের সঙ্গে সংবেদনশীল এই তদন্ত কমিটিতে কাজ করতে নিরাপদ বোধ করছেন না বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন।
শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে ভবিষ্যতেও উপাচার্য শিক্ষকদের সম্মানহানি করবেন বলে তিনি আশঙ্কা করেন এবং এ ধরণের অসম্মানজনক পরিস্থিতি এড়াতে স্ট্রাকচারাল কমিটিতে কাজ না করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
যে প্রক্রিয়া/পদ্ধতি ও দ্রুততার সঙ্গে শিক্ষক-সংশ্লিষ্ট বিষয়টির তদন্ত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে তাতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হওয়া কঠিন বলে তিনি মনে করেন। একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, কাজের পদ্ধতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে উপাচার্য সন্তুষ্টিবিধানের রাস্তা গ্রহণ করছে।
চিঠির শেষে তিনি উপাচার্যের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন পাশাপাশি বিবিধ পক্ষকে সন্তুষ্ট করবার রাস্তা ত্যাগ করে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসানকে ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।