যদি আপনি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করতে চান, তবে সবার আগে আপনাকে একটি বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব খুলতে হবে। এটি খুলতে হয় দেশের দুইটি স্টক এক্সচেঞ্জে অনুমোদিত ব্রোকারেজ হাউসের মাধ্যমে। যেমন ব্যাংকে লেনদেন বা ঋণের জন্য ব্যাংক হিসাব অপরিহার্য, তেমনি শেয়ারবাজারে অংশ নিতে হলে বিও হিসাব থাকা বাধ্যতামূলক।
প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) বা সেকেন্ডারি মার্কেটে শেয়ার কেনাবেচা—দুই ক্ষেত্রেই বিও অ্যাকাউন্ট ছাড়া লেনদেন সম্ভব নয়।
ব্রোকারেজ হাউস ছাড়াও, বিভিন্ন মার্চেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমেও বিও হিসাব খোলা যায়। এই ব্যাংকগুলো সাধারণত ব্রোকারেজ হাউসের সঙ্গে সমন্বয় করে এই সেবা দিয়ে থাকে। ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ বড় শহরগুলোতে এবং কিছু জেলা শহরে এসব সেবার শাখা রয়েছে। এখন অনেক ব্রোকার অনলাইনেও বিও অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ দিচ্ছে।
বিও হিসাব খোলার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও তথ্য:
১. জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি
২. সচল মুঠোফোন নম্বর ও ইমেইল ঠিকানা
৩. পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি
৪. ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) সনদের অনুলিপি
৫. ব্যাংক হিসাবসংক্রান্ত সাধারণ তথ্য
৬. পিতা-মাতা ও স্বামী/স্ত্রীর নামসহ প্রয়োজনীয় তথ্য
৭. নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি ও ছবি
ব্যয়:
বিও অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য একটি নির্ধারিত ফি দিতে হয়, যা ব্রোকার বা মার্চেন্ট ব্যাংক ভেদে ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত এই খরচ এক হাজার টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে।
বিও হিসাব কেন প্রয়োজন?
- লেনদেনের রেকর্ড রাখতে: বর্তমানে শেয়ার কাগুজে নয়, ডিজিটাল বা ডিম্যাট ফর্মে থাকে। তাই শেয়ার মালিকানা নিশ্চিত করতে বিও অ্যাকাউন্ট প্রয়োজন।
- লভ্যাংশ গ্রহণে সুবিধা: বোনাস শেয়ার বিও অ্যাকাউন্টে জমা হয় এবং নগদ লভ্যাংশ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে যায়।
- শেয়ার লেনদেন সহজতর হয়: অনলাইন বা অ্যাপের মাধ্যমে কেনা শেয়ার বিও অ্যাকাউন্টে জমা হয় এবং বিক্রির সময় সেখান থেকেই কেটে নেওয়া হয়।
মুঠোফোন ও ইমেইলের গুরুত্ব:
বিও অ্যাকাউন্টে লেনদেন হলেই আপনার ফোনে তাৎক্ষণিক বার্তা পাঠানো হয় এবং প্রতিদিন বা নির্ধারিত সময় পর ইমেইলে লেনদেনের আপডেট পাঠানো হয়, যাতে আপনি সহজেই নিজের বিনিয়োগ নজরে রাখতে পারেন।