উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদে এক নারী তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, স্বামী তাকে প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টা ব্যায়াম করতে বাধ্য করতেন এবং বলতেন, তিনি যেন বলিউড অভিনেত্রী নোরা ফাতেহির মতো দেখতে হন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত সপ্তাহে মুরাদনগরের ওই নারী থানায় গিয়ে এফআইআর দায়ের করেন। চলতি বছরের মার্চে তার বিয়ে হয় মীরাটের ২৮ বছর বয়সী এক শারীরিক শিক্ষকের সঙ্গে। নারী অভিযোগ করেছেন, স্বামী নোরা ফাতেহির প্রতি অতিরিক্ত আসক্ত। এজন্য তিনি স্ত্রীকে নির্দিষ্ট শারীরিক গড়নে আনতে নিয়মিত চাপ দিতেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, স্বামী প্রতিদিন অন্তত তিন ঘণ্টা জিমে থাকার জন্য তাকে বাধ্য করতেন। জিমে না গেলে খাওয়ার ব্যবস্থা বন্ধ করে দিতেন, যেন তার ওজন না বাড়ে। স্বামী প্রায়ই তার শারীরিক গড়ন নিয়ে কটাক্ষ করতেন এবং বলতেন, তার জীবন নষ্ট হয়ে গেছে, কারণ তিনি নাকি নোরা ফাতেহির মতো দেখতে কাউকে বিয়ে করতে পারতেন।
এছাড়া বিয়ের সময় কনেপক্ষ থেকে বরপক্ষকে একটি মাহিন্দ্রা স্করপিও গাড়ি, নগদ অর্থ ও গয়না দেওয়া হয় এবং পুরো বিয়েতে খরচ হয় প্রায় ৭৫ লাখ রুপি। তবুও শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে পণের জন্য তাকে হয়রানি করা হতো বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
নারীর অভিযোগ, তিনি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর স্বামী তার অজান্তে গর্ভপাতের ওষুধ খাওয়ান। এতে জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটে। তিনি জানান, ‘দুই মাস আগে জানতে পারি আমি অন্তঃসত্ত্বা। খবরটি শাশুড়িকে জানালে তিনি কোনো গুরুত্ব দেননি। একদিন স্বামী আমাকে একটি ওষুধ খাইয়ে দেন। পরে অনলাইনে খুঁজে জানতে পারি সেটি গর্ভপাতের ওষুধ।’
এরপর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সেখানেই চিকিৎসকেরা নিশ্চিত করেন গর্ভপাত হয়ে গেছে। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, জুলাইয়ের শেষ দিকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে ঘরে ঢুকতে দেননি।
গাজিয়াবাদের ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ (ডিসিপি) ধবল জয়সওয়াল বুধবার জানান, এ ঘটনায় নারীর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে পণ নির্যাতন, ইচ্ছাকৃতভাবে হেয় করা এবং জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগে মামলা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘অভিযোগের তদন্ত চলছে এবং আমরা সব দিক যাচাই করছি।’